মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে সরিয়ে হাতিয়ার দ্বীপাঞ্চলে রাখার ব্যবস্থা করার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। সেখানে শরণার্থী ক্যাম্প করার জন্য দাতা সংস্থাগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দিয়েছেন বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশন পরিচালিত দুইটি রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে ৩৩ হাজারের বেশি শরণার্থী রয়েছে। এর বাইরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৩ লাখের বেশি অনিবন্ধিত মায়ানমারের নাগরিক বিভিন্ন অস্থায়ী সেল্টারে অবস্থান করছে।
সম্প্রতি রাখাইন প্রদেশের সহিংস ঘটনায় আরও ৬৭ হাজার মায়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থানকারী এই সব রোহিঙ্গা কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় গাছপালা, বন জঙ্গল, পাহাড় কেটে বাড়ি ঘর তৈরির চেষ্টা করছে। এতে বনজঙ্গল, গাছপালা ও পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে। এ কারণে সরকার রোহিঙ্গাদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দ্বীপাঞ্চলে নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে।
সূত্র জানায়, সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা বসতির জন্য গাছপালা, পাহাড় ধ্বংসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, বাংলাদেশে যত রোহিঙ্গা আছে তাদেরকে কক্সবাজার থেকে সরিয়ে হাতিয়ার দ্বীপাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হবে। দাতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন, দাতারা আর্থিক সহযোগিতা করলে আমরা ওই দ্বীপ অঞ্চলে শরণার্থী ক্যাম্প করার জন্য যা করার করবো। সেখানে কয়েক হাজার একর জমি আছে, দাতারা সাহায্য করতে চাইলে সেখানে রোহিঙ্গাদের ঘর বানিয়ে দেওয়া হবে। দরকার হলে আমরা সেনাবাহিনী দিয়ে শরণার্থী ক্যাম্পের ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই রোহিঙ্গারা বসতি স্থাপন করতে গাছপালা, পাহাড় কেটে নষ্ট করছে। তারা বনজঙ্গল ধ্বংস করছে। দাতারা সাহায্য করতে চাইলে আমরা রোহিঙ্গাদের সেখানে নিয়ে যাবো।
সূত্র আরও জানায়, এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যে দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে প্রাথমিক কিছু আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আবারও কথা বলবো, বিস্তারিত আলোচনা করবো।